Sunday, May 11, 2025

 


আবেগ নিয়ন্ত্রণের কিছু মায়াবী কৌশল

আবেগ জিনিসটা অদ্ভুত। কখনও তা নদীর মতো শান্ত, কখনও আবার পাহাড়ি ঝর্ণার মতো উন্মাতাল। মানুষ আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, সেই আবেগই তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর তখনই ঘটে বিপত্তি।

১. নিঃশ্বাসে লুকিয়ে থাকে শান্তি

একবার চেষ্টা করে দেখুন—চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিন। তারপর ঠিক তেমনি ধীরে ছেড়ে দিন। এই ছোট্ট কাজটা যদি প্রতিদিন দু’-একবার করেন, দেখবেন—রাগ, দুঃখ কিংবা অস্থিরতা ধীরে ধীরে গলিয়ে যাচ্ছে। মনে হবে, ভেতরের অগ্নিকুণ্ডে যেন বরফ ফেলা হয়েছে।

২. নিজেকে একটু বিরতি দিন

কেউ কিছু বললেই চট করে উত্তর দেবেন না। একটা কাপ চায়ের মতো নিজেকে একটু বসতে দিন। ভেতরের আবেগগুলোকে থিতু হতে দিন। অনেক সময় দেখা যায়, কিছু না বলাটাই সবচেয়ে বড় জয়।

৩. ভাবনার খাতা খুলে ফেলুন

যা মনে আসে, লিখে ফেলুন। রাগ, দুঃখ, আনন্দ—সব। কাগজের ওপর আবেগগুলো ঝরে পড়লে মনে হবে, বুকটা হালকা হয়ে গেছে। লেখার মধ্যে এক ধরনের নিরাময় আছে—যা মুখে বলা যায় না, তা কলমে বলা যায়।

৪. মনে করিয়ে দিন—সবই ক্ষণস্থায়ী

রাগ হোক বা কষ্ট—সবই চলে যায়। সূর্য যেমন অস্ত যায়, আবার ওঠেও। নিজেকে বারবার বলুন—“এটাও কেটে যাবে।” এই সহজ বাক্যটাই ভেতরের ঝড়কে শান্ত করতে পারে।

৫. ঘনিষ্ঠ কাউকে বলুন

মন খুলে কথা বলুন এমন একজন মানুষ থাকুক—বন্ধু, সঙ্গী, মা, কিংবা খালাতো ভাই। কাঁধে মাথা রেখে বলুন—“ভালো লাগছে না।” অনেক সময় কেবল বলাটাই মন ভালো করে দেয়।

৬. শরীরকে সচল রাখুন

হাঁটুন। ছাদে, পার্কে কিংবা নিজ ঘরের এক কোণে। শরীর চললে, মনও হালকা হয়। আবেগ জমে থাকলে তা বেরিয়ে যায় ঘামের সঙ্গে।

৭. সংগীতের আশ্রয় নিন

স্নিগ্ধ সুরে ভেসে যেতে দিন নিজেকে। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি কিংবা প্রিয় কোনো গান শুনুন। হৃদয়কে স্পর্শ করে এমন সুরে অনেক সময় অশান্ত মন শান্ত হয়ে যায়।


মানুষ তো যন্ত্র নয়—আবেগ থাকবে, অশ্রুও ঝরবে। তবে সেই আবেগকে যদি একটু যত্ন করে আলোর পথে হাঁটানো যায়, তাহলে জীবনটা অনেকটাই সুন্দর হয়ে ওঠে।

চেষ্টা করে দেখুন। নিজেকে ভালোবাসার এটাই একরকম উপায়।

©আরিফ আহমদ


No comments: