এমআইটির গবেষণা: চ্যাটজিপিটি কি আমাদের মস্তিষ্ককে অলস করে দিচ্ছে?
প্রযুক্তির এই যুগে আমরা ভেবেছিলাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) আমাদের মস্তিষ্ককে আরও ধারালো করবে। কিন্তু এমআইটি’র সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, সত্যিটা উল্টো হতে পারে।
চার মাস ধরে সংগৃহীত মস্তিষ্ক-স্ক্যান ও মানসিক ক্ষমতার ডেটা এক অস্বস্তিকর চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে—
গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীরা যখন চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছিলেন, তখন—
→ ৮৩.৩% ব্যবহারকারী কয়েক মিনিট আগেই লেখা নিজের একটি বাক্যও মনে রাখতে পারেননি।
→ অথচ যারা AI ছাড়া লিখছিলেন, তাদের মনে রাখতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য—
→ মস্তিষ্কের সংযোগক্ষমতা (Brain Connectivity) ৭৯ পয়েন্ট থেকে নেমে ৪২ পয়েন্টে এসে দাঁড়ায়।
→ মানে, ৪৭% হ্রাস—যা সর্বনিম্ন মানসিক সক্রিয়তা।
এমনকি পরের সেশনে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার বন্ধ করলেও, এই ব্যবহারকারীদের মস্তিষ্ক আগের মতো সক্রিয় হয়নি।
→ তাদের কর্মক্ষমতা থেকে গেছে AI না-ব্যবহারকারীদের তুলনায় অনেক কম।
→ এ থেকে ইঙ্গিত মেলে—এটা কেবল নির্ভরশীলতা নয়, বরং মানসিক সক্ষমতার দুর্বলতা।
শিক্ষকরা আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন—
→ AI দিয়ে লেখা রচনাগুলো প্রযুক্তিগতভাবে নিখুঁত হলেও বেশিরভাগ সময়ই “রোবোটিক”, “আত্মাহীন” এবং “গভীরতার অভাব” বলা হয়েছে।
এখানেই আসল বৈপরীত্য—
→ চ্যাটজিপিটি আপনার কাজ শেষ করার গতি ৬০% বাড়িয়ে দেয়।
→ কিন্তু শেখার জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক পরিশ্রম কমিয়ে দেয় ৩২%।
সবচেয়ে সফল গ্রুপ কারা?
→ যারা প্রথমে AI ছাড়া শুরু করেছিলেন এবং পরে যুক্ত করেছিলেন।
→ তাদের স্মৃতিশক্তি, মস্তিষ্কের সক্রিয়তা এবং সামগ্রিক ফলাফল সবার সেরা।
চ্যাটজিপিটি ব্যবহার আপনাকে ক্ষমতাবান মনে করাতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার ভাবনার কাজটি নিজের হাতে নিয়ে নিচ্ছে।
→ গতি বাড়ছে, কিন্তু জড়িত থাকা কমছে।
→ উত্তর পাচ্ছেন, কিন্তু চিন্তা করার ক্ষমতা হারাচ্ছেন।
মূল শিক্ষা: AI এড়িয়ে চলার কথা নয়—বরং সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে।
→ সাহায্য নিন, কিন্তু আপনার মস্তিষ্ককে প্রতিস্থাপন করতে দেবেন না।
→ মানসিক শক্তি গড়ে তুলুন, নির্ভরশীলতা নয়।
এমআইটির এই প্রাথমিক গবেষণা স্পষ্ট করে দিল—আমরা যেভাবে AI ব্যবহার করি, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
Source : The Brain Maze
No comments:
Post a Comment